রক্ত কাকে বলে

রক্ত কাকে বলে? রক্তের প্রকারভেদ?

রক্ত একটি প্রোটিন-সমৃদ্ধ তরল, যা প্লাজমা নামে পরিচিত। এতে লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা ও অণুচক্রিকা ভাসমান থাকে। মানব দেহের ৭-৮% ওজন হলো রক্ত।

রক্ত কাকে বলে

রক্ত কাকে বলে? 

রক্ত একটি প্রোটিন-সমৃদ্ধ তরল দিয়ে গঠিত, যা মূলত প্লাজমা বা রক্তরস নামে পরিচিত। এতে ভাসমান অবস্থায় কোষীয় উপাদানগুলো যেমন শ্বেত রক্তকণিকা, লোহিত রক্তকণিকা, ও অণুচক্রিকা থাকে। মানব দেহের মোট ওজনের ৭-৮% হলো রক্ত।

আরও জানুনঃ যৌন প্রজনন কাকে বলে?

রক্তের প্রকারভেদ

  • A টাইপ: A টাইপ রক্তে A অ্যান্টিজেন এবং B অ্যান্টিবডি থাকে। 
  • B টাইপ: B টাইপ রক্তে B অ্যান্টিজেন এবং A অ্যান্টিবডি থাকে। 
  • AB টাইপ: AB টাইপ রক্তে A এবং B উভয় অ্যান্টিজেন থাকে, কিন্তু কোনো অ্যান্টিবডি থাকে না। 
  • O টাইপ: O টাইপ রক্তে কোনো অ্যান্টিজেন থাকে না, কিন্তু A এবং B উভয় অ্যান্টিবডি থাকে।

রক্তের রিজাস পজিটিভ (+) এবং নেগেটিভ (-) ভাগ করা হয় রিজাস ফ্যাক্টর অনুযায়ী।

আরও জানুনঃ শ্বসন কাকে বলে?

রক্ত হল উচ্চশ্রেণীর প্রাণিদেহের এক প্রকার কোষবহুল, বহু জৈব ও অজৈব পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত। এটি জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি অক্সিজেন, পুষ্টি, ও হরমোন বহন করে। এছাড়া, রক্ত রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হয় এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

রক্ত কাকে বলে

রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কত?

হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ মানব দেহে বয়স, লিঙ্গ, ও স্বাস্থ্যের অবস্থা অনুযায়ী পরিবর্তন পেতে পারে। প্রাপ্তির হিমোগ্লোবিন পরিমাণ পুরুষের জন্য প্রায় ১৩.৮ থেকে ১৭.২ গ্রাম/ডিসিলিটার এবং মহিলাদের জন্য ১২.১ থেকে ১৫.১ গ্রাম/ডিসিলিটার হতে পারে। এটি অক্সিজেন বহনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নিম্ন পরিমাণ অক্সিজেন বহনে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

আরও জানুনঃ শ্রেণিবিন্যাস কাকে বলে?

রক্তের উপাদান কয়টি ও কী কী

রক্ত একটি জটিল তরল দিয়ে গঠিত, যা মূলত কোষীয় এবং অকোষীয় দুই প্রকারের উপাদান নিয়ে গঠিত।

  • প্লাজমা: এটি রক্তের প্রায় ৫৪.৩% হতে পারে। প্লাজমা মূলত পানি, মিনারেল, প্রোটিন, হরমোন, গ্লুকোজ এবং অন্যান্য উপাদান নিয়ে গঠিত।
  • লোহিত রক্তকণিকা (ইরিথ্রোসাইট): এগুলি রক্তের প্রায় ৪৫% হতে পারে। এই কণিকাগুলি অক্সিজেন বহন করে।
  • শ্বেত রক্তকণিকা (লিউকোসাইট): এগুলি রক্তের প্রায় ০.৭% হতে পারে। এই কণিকাগুলি রোগ প্রতিরোধে কাজ করে।
  • অণুচক্রিকা (প্লাটিলেট): এগুলি রক্ত জমা হওয়ার প্রক্রিয়াতে সহায়ক।

আরও জানুনঃ ক্ষমতা কাকে বলে?

এছাড়া, রক্তে ভিটামিন, ইলেকট্রোলাইট, ক্লোরাইড, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, পটাসিয়াম এবং অন্যান্য মিনারেল থাকে।

রক্তের এই উপাদানগুলি মিলে জোড়া জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। লোহিত রক্তকণিকা অক্সিজেন বহন করে, শ্বেত রক্তকণিকা ইমিউন সিস্টেম বৃদ্ধি করে, অণুচক্রিকা রক্ত জমা হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে, এবং প্লাজমা এই সব কণিকা এবং উপাদান বহন করে। এর মানে, রক্ত একটি জটিল কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বয়োলজিকাল সিস্টেম যা জীবনের জন্য অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ।

রক্তের চারটি কাজ কি কি?

রক্ত মানব দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এর বিভিন্ন কাজ রয়েছে। নিচে রক্তের চারটি প্রধান কাজ বর্ণনা করা হলো:

  • অক্সিজেন এবং পুষ্টির বহন: লোহিত রক্তকণিকা অক্সিজেন বহন করে শরীরের বিভিন্ন অংশে। এছাড়া, প্লাজমা গ্লুকোজ, আমিনো এসিড, হরমোন এবং অন্যান্য পুষ্টির উপাদান বহন করে।
  • রোগ প্রতিরোধ: শ্বেত রক্তকণিকা বা লিউকোসাইট শরীরের ইমিউন সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এগুলি ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্যান্য প্যাথোজেন দ্বারা আক্রান্ত স্থানে যায় এবং তাদের নষ্ট করে।
  • হোমোস্টেসিস বজায় রাখা: রক্ত শরীরের তাপমাত্রা, pH এবং আয়নিক সাম্য বজায় রাখে। এটি শরীরের মেটাবোলিক প্রক্রিয়াগুলির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • রক্ত জমা এবং আঘাত প্রতিরোধ: অণুচক্রিকা বা প্লাটিলেট রক্ত জমা করে এবং শরীরের কোনো অংশে আঘাত হলে তা প্রতিরোধ করে।

এই চারটি কাজ মিলে জোড়া রক্ত করে একটি অমূল্য বয়োলজিকাল সিস্টেম। এটি জীবনের জন্য অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ এবং এর বিভিন্ন উপাদান মিলে জোড়া শরীরের সম্পূর্ণ কাজে সহায়ক হয়।

সারাংশ

রক্ত হলো মানব দেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান, যা প্লাজমা, লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা, এবং অণুচক্রিকা থাকে। এটি অক্সিজেন, পুষ্টি, হরমোন এবং অন্যান্য পুষ্টির উপাদান বহন করে এবং শরীরের তাপমাত্রা, pH এবং আয়নিক সাম্য নিয়ন্ত্রণ করে। 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *