যোজনী কাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি?
যোজনী বা যোজ্যতা হল কোন মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসে শেষ কক্ষপথে যত সংখ্যক বিজোড় ইলেকট্রন থাকে তা নির্দেশ করে। উদাহরণস্বরূপ, সোডিয়াম (Na) পরমাণুর যোজনী বলে যেখানে শেষ কক্ষপথে একটি বিজোড় ইলেকট্রন থাকে। যোজনী মৌলের অন্য মৌলের সঙ্গে যুক্ত হতে সক্ষম।
Table of Contents
যোজনী কাকে বলে?
যোজনী বা যোজ্যতা মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসের সাথে সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিমাপ। এটি মৌলের শেষ কক্ষপথে যে ইলেকট্রন আছে সেটি নির্দেশ করে। যদি শেষ কক্ষপথে একটি ইলেকট্রন থাকে তাহলে সেটি বিজোড় যোজনী।
আরও পড়ুনঃ সরণ কাকে বলে?
যদি ইলেকট্রন বিন্যাসে শেষ কক্ষপথে আরও ইলেকট্রন থাকে, যেগুলি অসংখ্যক হতে পারে, তাহলে সেটি অবিজোড় যোজনী। সোডিয়াম (Na) একটি উদাহরণ, যেখানে শেষ কক্ষপথে একটি বিজোড় ইলেকট্রন থাকে, তাহলে এটি বিজোড় যোজনী। এই সাধারণ জোজনী এবং অবিজোড় যোজনী দুইটি প্রকারের যোজনী।
যোজনী কত প্রকার ও কি কি?
যোজনী মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসের সাথে সম্পর্কিত দুটি প্রকারের যোজনী থাকে:
- বিজোড় যোজনী: এই প্রকারের যোজনীতে মৌলের শেষ কক্ষপথে একটি ইলেকট্রন থাকে। উদাহরণস্বরূপ, সোডিয়াম (Na) একটি বিজোড় যোজনী মৌল।
- অবিজোড় যোজনী: এই প্রকারের যোজনীতে মৌলের শেষ কক্ষপথে আরও একাধিক ইলেকট্রন থাকে, অর্থাৎ সংখ্যা অসংখ্যক হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, অক্সিজেন (O2) একটি অবিজোড় যোজনী মৌল, যেখানে শেষ কক্ষপথে দুটি ইলেকট্রন থাকে।
আরও পড়ুনঃ শ্বসন কাকে বলে?
এই দুটি প্রকারের যোজনী মৌল বিভিন্ন মৌলে থাকতে পারে, এবং তাদের ইলেকট্রন বিন্যাস মৌলের গুণগত বৈশিষ্ট্যের একটি।
যোজনী বের করার সূত্র
যোজনী বের করার সূত্র সহজভাবে দেওয়া যেতে পারে:
যোজনী = শেষ কক্ষপথের ইলেকট্রনের সংখ্যা
এই সূত্রটির মাধ্যমে আপনি একটি মৌলের যোজনী বের করতে পারেন যেখানে শেষ কক্ষপথে কতগুলি বিজোড় ইলেকট্রন থাকে, সে সংখ্যাটি মৌলের যোজনী হবে। যদি শেষ কক্ষপথে একটি ইলেকট্রন থাকে, মৌলটি বিজোড় যোজনী হবে, এবং যদি অন্যান্য কক্ষপথে আরও ইলেকট্রন থাকে, মৌলটি অবিজোড় যোজনী হবে।
আরও পড়ুনঃ ভগ্নাংশ কাকে বলে?
১১৮ টি মৌলের যোজনী তালিকা
নীচে একটি তালিকা দেওয়া হল, যেখানে ১১৮ টি মৌলের যোজনী সংখ্যা দেওয়া হয়েছে:
মৌল | যোজনী |
হাইড্রোজেন (H) | ১ |
হেলিয়াম (He) | ২ |
লিথিয়াম (Li) | ৩ |
বেরিলিয়াম (Be) | ৪ |
বোরন (B) | ৫ |
কার্বন (C) | ৬ |
নাইট্রোজেন (N) | ৭ |
অক্সিজেন (O) | ৮ |
ফ্লোরিন (F) | ৯ |
নিউয়নিয়াম (Ne) | ১০ |
সোডিয়াম (Na) | ১১ |
ম্যাগনেসিয়াম (Mg) | ১২ |
আলুমিনিয়াম (Al) | ১৩ |
সিলিকন (Si) | ১৪ |
ফসফরাস (P) | ১৫ |
সালফার (S) | ১৬ |
ক্লোরিন (Cl) | ১৭ |
আর্গন (Ar) | ১৮ |
পটাসিয়াম (K) | ১৯ |
ক্যালশিয়াম (Ca) | ২০ |
স্ক্যান্ডিয়াম (Sc) | ২১ |
টাইতান (Ti) | ২২ |
ভ্যান্ডিয়াম (V) | ২৩ |
ক্রোমিয়াম (Cr) | ২৪ |
ম্যাঙ্গানিজ (Mn) | ২৫ |
আয়রন (Fe) | ২৬ |
কোবল্ট (Co) | ২৭ |
নিকেল (Ni) | ২৮ |
কোপার (Cu) | ২৯ |
জিংক (Zn) | ৩০ |
গ্যালিয়াম (Ga) | ৩১ |
জার্ম্যানিয়াম (Ge) | ৩২ |
আর্সেনিক (As) | ৩৩ |
সেলেনিয়াম (Se) | ৩৪ |
ব্রোমিন (Br) | ৩৫ |
ক্রিপ্টন (Kr) | ৩৬ |
রুবিডিয়াম (Rb) | ৩৭ |
স্ট্রন্টিয়াম (Sr) | ৩৮ |
ইট্রিয়াম (Y) | ৩৯ |
জির্কোনিয়াম (Zr) | ৪০ |
নিয়োবিয়াম (Nb) | ৪১ |
মোলিবডেনাম (Mo) | ৪২ |
টেকনেশিয়াম (Tc) | ৪৩ |
রুথেনিয়াম (Ru) | ৪৪ |
রোডিয়াম (Rh) | ৪৫ |
প্যালেডিয়াম (Pd) | ৪৬ |
সিলভার (Ag) | ৪৭ |
ক্যাডমিয়াম (Cd) | ৪৮ |
ইন্ডিয়াম (In) | ৪৯ |
টিন (Sn) | ৫০ |
আ্যান্টিমনি (Sb) | ৫১ |
টেলুরিয়াম (Te) | ৫২ |
আইয়োডিন (I) | ৫৩ |
জিননিয়়াম (Xe) | ৫৪ |
সেসিয়াম (Cs) | ৫৫ |
বারিয়াম (Ba) | ৫৬ |
ল্যান্থানাইড সিরিজ | ৫৭-৭১ |
সেরিয়াম (Ce) | ৫৮ |
প্রাসিওডিমিয়াম (Pr) | ৬১ |
নিওডিমিয়াম (Nd) | ৬০ |
প্রমিথিয়াম (Pm) | ৬৩ |
স্মাইলিয়াম (Sm) | ৬৪ |
ইউরোপিয়াম (Eu) | ৬৩ |
গ্যাডলিনিয়াম (Gd) | ৬৫ |
টারবিয়াম (Tb) | ৬৬ |
ডিসপ্রোসিয়াম (Dy) | ৬৭ |
হোলমিয়াম (Ho) | ৬৮ |
এরবিয়াম (Er) | ৬৯ |
থুলিয়াম (Tm) | ৭০ |
ইট্রবিয়াম (Yb) | ৭১ |
লুটেটিয়াম (Lu) | ৭১ |
হফনিয়াম (Hf) | ৭২ |
তান্তলাম (Ta) | ৭৩ |
টাংস্টেন (W) | ৭৪ |
রেনিয়াম (Re) | ৭৫ |
অসমিয়াম (Os) | ৭৬ |
ইরিডিয়াম (Ir) | ৭৭ |
প্ল্যাটিনাম (Pt) | ৭৮ |
গোল্ড (Au) | ৭৯ |
মার্কুরি (Hg) | ৮০ |
থালিয়াম (Tl) | ৮১ |
প্রোট্যাক্টিনিয়াম (Pa) | ৮৯ |
ইউরেনিয়াম (U) | ৯২ |
নিউট্রনিয়াম (Np) | ৯৩ |
প্লুটনিয়াম (Pu) | ৯৪ |
আমেরিসিয়াম (Am) | ৯৫ |
কিউরিয়াম (Cm) | ৯৬ |
বেরকেলিয়াম (Bk) | ৯৭ |
ক্যালিফোর্নিয়াম (Cf) | ৯৮ |
আইমারিশিয়াম (Es) | ৯৯ |
ফারমিশিয়াম (Fm) | ১০০ |
মেন্ডেলিয়াম (Md) | ১০১ |
নোবেলিয়াম (No) | ১০২ |
ল্যাওরেন্সিয়াম (Lr) | ১০৩ |
রাদনিয়াম (Rf) | ১০৪ |
দুবনিয়াম (Db) | ১০৫ |
সিবরগনিয়াম (Sg) | ১০৬ |
ভারমোরিয়াম (Bh) | ১০৭ |
হসন্ত (Hs) | ১০৮ |
মাইটনিয়াম (Mt) | ১০৯ |
ড্যামন্টিয়াম (Ds) | ১১০ |
রোয়েন্টজেনিয়াম (Rg) | ১১১ |
কপারনিকিয়াম (Cn) | ১১২ |
নিহনিয়াম (Nh) | ১১৩ |
ফ্লেরোভিয়াম (Fl) | ১১৪ |
মোস্কভিয়াম (Mc) | ১১৫ |
লিভিয়াম (Lv) | ১১৬ |
টেনেসিয়াম (Ts) | ১১৭ |
ওগানেসন (Og) | ১১৮ |
পরিশেষে
যোজনী বা যোজ্যতা মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিমাপ। এটি দুই প্রকারের: বিজোড় এবং অবিজোড়। বিজোড় যোজনীতে শেষ কক্ষপথে একটি ইলেকট্রন থাকে, অবিজোড়ে একাধিক।
এই পরিমাপ মৌলের গুণগত বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে। একটি সূত্র দেওয়া হয়েছে যোজনী বের করার জন্য। মৌলের তালিকা দেওয়া হয়েছে ১১৮ টি মৌলের জন্য।