মাটি কাকে বলে

মাটি কাকে বলে? মাটির প্রকারভেদ ও বৈশিষ্ট্য

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে মাটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান । মাটি ছাড়া আমাদের বেঁচে থাকা অসম্ভব। মাটি বলতে ভূত্বকের ওপরে স্তরে অবস্থিত এবং সূক্ষ্ম শিলাখণ্ড দিয়ে গঠিত নরম ও শিথিল স্তর ভাগকে বোঝায়।

যেহেতু মাটি আমাদের প্রত্যেকের জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান তাই মাটি সম্পর্কে আমাদের সম্মুখ এবং পরিষ্কার ধারণা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে মাটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

মাটি কাকে বলে

মাটি কাকে বলে?

সাধারণত ভূত্বকের ওপরে অবস্থিত নরম, কর্ধমাক্ত ,শিলা ও  বালি ইত্যাদি  মিশ্রিত শিথিল উপাদান বা অংশকেই মাটি বলা হয়।

মাটি কাকে বলে

মাটির বৈশিষ্ট্য সমূহ

মাটির বহু ধরনের বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা বলে শেষ করা প্রায় অসম্ভব। তবে এর মধ্যে কিছু প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য নিচে আলোচনা করা হলোঃ

আরও জানুনঃ নাগরিক কাকে বলে?

মাটির ধরণবৈশিষ্ট্য
লোমটি মাটিঅতি পানির পরিপূর্ণ, উচ্চ পানি ধারণ ক্ষমতা, পানি সরাসরি গমন করে, শক্ত ক্রিমপ পাত উৎপন্ন করে
বালু মাটিমাঝে মাঝে পানি ধরার ক্ষমতা, মাঝে মাঝে পানি সরাসরি গমন করে, সাধারণভাবে উর্বর মাটি
কার্বনেট মাটিভাল পানি ধারণ ক্ষমতা, পানি সরাসরি গমন না করে, উচ্চ পুষ্টি মৌলিক উপাদান সমৃদ্ধ
গাদা মাটিঅল্প পানি ধারণ ক্ষমতা, সহজে উত্থানযোগ্য, চুন ও অক্সিজেন আদান-প্রদান শ্বাসক্রিয়া  সংগঠিত হয়।
সিলটি মাটিপানি ধরার ক্ষমতা ন্যূনতম বা কম, বেলেজ উর্বর মাটি, আবহাওয়া ও পানির প্রভাব নিষ্ক্রিয়।
লোম মাটিপানি ধরার ক্ষমতা উচ্চ, মিনারেল সামগ্রী সমৃদ্ধ, উচ্চ উর্বরতা, উত্তপ্ততা জনক মাটি।
মাটির বিশিষ্ট

মাটির প্রকারভেদ সমূহ এবং তাদের সংজ্ঞা

 মাটি বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। এর প্রকারভেদ সমূহ নিজে আলোচনা করা হলো  সংজ্ঞা সহ:

আরও জানুনঃ ট্রাফিক কাকে বলে?

  1. এটেল মাটিঃ যেসব মাটিতে বালি অপেক্ষা পোলি ও কাঁদার ভাগ বেশি থাকে তাকে বলা হয়ে থাকে।
  2. বেলে মাটিঃ যে মাটির বৈশিষ্ট্য হতে দেখা যায় যে এই মাটিতে  পোলি ও কাদা অপেক্ষায় বালির পরিমাণ বেশি থাকে তাকে বেলে মাটি বলে।
  3. দোআঁশ মাটিঃ যেসব মাটিতে ৪০ পার্সেন্ট বালি, ২০ পার্সেন্ট কাঁদা ও ৪০ পার্সেন্ট  পলি মাটি যুক্ত থাকে তাকে  দোআশ মাটি বলে। একে সুষমা মাটি বা অত্যন্ত পুষ্টিকর মাটি ও বলা হয়ে থাকে।

বিভিন্ন ধরণের মাটি সমূহের বৈশিষ্ট্য

বিভিন্ন ধরণের মাটির বিশিষ্ট বিভিন্ন ধরণের হয়। এখানে সকল ধরণের মাটির বিশিষ্ট দেওয়া হল। 

এটেল মাটির বৈশিষ্ট্য

  • এ ধরনের মাটিতে সর্বদা বালি অপেক্ষা পলি ও কাদার ভাগ বা পরিমান বেশি থাকে।
  •  এই ধরনের মাটি জল ধারণ ক্ষমতা অনেক বেশি।
  •  এই মাটিতে ভালোভাবে চলাচল করতে পারে না কারণ এর ঘনত্ব বা  পূরুত্ব বেশি।

বেলে মাটির বৈশিষ্ট্য

  • এই মাটিতে বেলের পরিমাণ অনেক অনেক বেশি থাকে।
  •  এই মাটির জল ধারণ ক্ষমতা বা পানি ধারণ ক্ষমতা খুবই কম।
  •  বেলে মাটিতে কিছু ফল খুব ভালো হয় বা ফসল খুব ভালো জন্মায় যেমন তরমুজ চিনা বাদাম মিষ্টি আলু ইত্যাদি ভালো জন্মায়।

দোআঁশ মাটির বৈশিষ্ট্য

  • এই  মাটিতে বালি পোলি ও কাদার পরিমাণ সমান সমান হয়ে থাকে।
  •  এই মাটির জল ধারণ ক্ষমতা খুব একটা বেশিও না আবার খুব একটা কমও না অর্থাৎ জল ধারণ ক্ষমতা মাঝারি হয়ে থাকে।
  • চাষাবাদের জন্য দোআঁশ মাটি অত্যন্ত উপযুক্ত একটি মাটি। কারণ এই মাটিতে ধান পাট গম আলু ইত্যাদি খুব ভালো জন্মায় এবং ফলন ভালো হয়। তাই এটি সকল কৃষকদের কাছে একটি প্রিয় মাটি।।

শেষ কথা

যেহেতু মানব জীবনের চলার জন্য এবং বেঁচে থাকার জন্য মাটির বিকল্প কোন উপায় বা পথ নেই তাই আমাদের মাটি সম্পর্কে সম্যক এবং পরিষ্কার ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি। কারণ মাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জীবিকা অর্জনের এবং মানুষের জীবন ধারণের উপাদান। এই মাটি থেকে আমরা আমাদের সকল ধরনের খাদ্য এবং আহার সংগ্রহ করে থাকি।

আমাদের মানব জীবনে এই অতি গুরুত্বপূর্ণ মাটি সম্পর্কে বিস্তারিত এবং পরিষ্কার ধারণা রাখার জন্য উপরে লেখাটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে আপনাকে অবশ্যই পড়তে হবে। তাহলে আপনি মাটি সম্পর্কে  সুন্দর ও পরিষ্কার ধারণা পাবেন। আর আপনি যদি এই পোস্টটি সম্পন্ন  মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *