ভূমিকম্পের মাত্রা কি

ভূমিকম্পের মাত্রা কি? কিভাবে ভূমিকম্পের মাত্রা পরিমাপ করা হয়?

ভূমিকম্পের মাত্রা অর্থ হচ্ছে ভূমিকম্পের তীব্রতা। কোন অঞ্চলে ভূমিকম্প হলে সেটির  তীব্রতা কেমন ছিল এটাকে প্রকাশ করতেই ভূমিকম্পের মাত্রা এই শব্দটিকে ব্যবহার করা হয়। এটি বহুল প্রচলিত একটি শব্দ। 

আমাদের আজকের আলোচনায় আমরা জানার চেষ্টা করব ভূমিকম্পের তীব্রতা কি? ভূমিকম্পের তীব্রতা পরিমাপের যন্ত্র এবং সেই যন্ত্রগুলো কিভাবে কাজ করেন এবং জানার চেষ্টা করব ভূমিকম্পের তীব্রতা প্রকাশের একক কি? তাহলে দেরি না করে চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

ভূমিকম্পের মাত্রা কি

ভূমিকম্পের মাত্রা কি?

ভূমিকম্পের মাত্রা অর্থ হচ্ছে ভূমিকম্পের তীব্রতা। কোন অঞ্চলে ভূমিকম্প হলে সেটির  তীব্রতা কেমন ছিল এটাকে প্রকাশ করতেই ভূমিকম্পের মাত্রা এই শব্দটিকে ব্যবহার করা হয়। ভূমিকম্পের তীব্রতা পরিমাপ করার জন্য কয়েকটি পদ্ধতি আছে রিকটার স্কেল।

আমরা ভূমিকম্পের তীব্রতা কে যে মাত্রায় প্রকাশ করি এটা সাধারণত রিকটার স্কেলের একটি পরিমাণ। রিঙ্কারে স্কেল ভূমিকম্পের তীব্রতাকে এক থেকে দশ পর্যন্ত সংখ্যায় প্রকাশ করে। যেখানে এক হচ্ছে সর্বনিম্ন তীব্রতা এবং ১০ হচ্ছে ভূমিকম্পের সর্বোচ্চ  তীব্রতা। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প, ৬ মাত্রার ভূমিকম্প ইত্যাদি।

আরও পড়ুনঃ ইতিহাস কাকে বলে?

ভূমিকম্পের মাত্রা কিভাবে পরিমাপ করা হয়?

ভূমিকম্প বিভিন্ন স্কেল ব্যবহার করে পরিমাপ করা হয়, প্রতিটি স্কেল সিসমিক ঘটনার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে। দুটি বহুল ব্যবহৃত স্কেল হল রিখটার স্কেল এবং মোমেন্ট ম্যাগনিটিউড স্কেল (Mw)। এখানে প্রতিটির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ রয়েছে:

রিখটার স্কেল

চার্লস এফ. রিখটার 1935 সালে রিখটার স্কেল এর আবিস্কার করেন। এটি ভূমিকম্প দ্বারা উত্পাদিত সিসমিক তরঙ্গের প্রশস্ততা পরিমাপ করে। স্কেলটি লগারিদমিক, যার অর্থাৎ স্কেলে একটি পূর্ণ সংখ্যা বৃদ্ধি সমান প্রশস্ততায় দশগুণ বৃদ্ধি। যা  প্রায় 31.6 গুণ বেশি শক্তি প্রকাশ নিরদেশ করে।

আরও পড়ুনঃ ভূমিকম্পের কারণ কয়টি ও এর ফলাফল কি?

আন্তর্জাতিকভাবে রিখটার স্কেল এখন খুব বেশি ব্যবহৃত হয় না, মোমেন্ট ম্যাগনিচুড স্কেল রিখটার স্কেলের জায়গা অনেক কাদহর করে নিয়েছে। তবে বাংলাদেশে এখনো রিক্টার স্কেলের ব্যবহার বেশ প্রচলিত। 

মোমেন্ট ম্যাগনিচুড স্কেল (Mw)

মোমেন্ট ম্যাগনিচুড স্কেল বর্তমানে ভূমিকম্পের মাত্রা পরিমাপের জন্য সর্বাধিক ব্যবহৃত পদ্ধতি। এটি ভূমিকম্পের মাত্রা ও আকার আরও সঠিকভাবে পরিমাপ করতে পারে। যেমন ফল্টের দৈর্ঘ্য, ফল্ট বরাবর পিছলে যাওয়া এবং জড়িত শিলাগুলির অনমনীয়তা বিবেচনা করে।

রিখটার স্কেলের মতো, মোমেন্ট ম্যাগনিচুড স্কেলটিও লগারিদমিক, তাই প্রতিটি পূর্ণ সংখ্যা বৃদ্ধি সমান প্রশস্ততায় দশগুণ বৃদ্ধি এবং প্রায় 32 গুণ বেশি শক্তি প্রকাশ করে। বড় ভূমিকম্পের জন্য মোমেন্ট ম্যাগনিচুড স্কেলের পরিমাপ আরও নির্ভরযোগ্য পরিমাপ হিসাবে বিবেচনা করা হয় কারণ এটি ভূমিকম্পের ঘটনাগুলির একটি বিস্তৃত আনাল্যসিস করতে পারে।

মার্কালি তীব্রতা (MMI) স্কেল

মাত্রা ছাড়াও, ভূমিকম্পের তীব্রতা প্রায়শই পরিবর্তিত মার্কালি তীব্রতা (MMI) স্কেল ব্যবহার করে পরিমাপ করা হয়। এই স্কেলটি নির্দিষ্ট স্থানে ভূমিকম্পের প্রভাব বর্ণনা করে এবং I (অনুভূত হয়নি) থেকে XII (সম্পূর্ণ ধ্বংস) পর্যন্ত রোমান সংখ্যায় প্রকাশ করা হয়। তবে মার্কালি তীব্রতা (MMI) স্কেল এর দেওয়া ফলাফল এখনো পর্যন্ত অতটা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।

ভূমিকম্পের তীব্রতা প্রকাশের একক কি?

ভূমিকম্পের তীব্রতা প্রকাশের একক, এর পরিমাপ পদ্ধতি ভেদে পরিবর্তিত হয়।  যেমন রিখটার স্কেলে ভূমিকম্প এর তীব্রতা প্রকাশের একক হচ্ছে মাত্রা। মোমেন্ট ম্যাগনিচুড স্কেলেও রিখটার স্কেলের মতো সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা হয়। আবার মার্কালি তীব্রতা (MMI) স্কেলের প্রকাশের একক এক থেকে দশ পর্যন্ত রোমান সংখ্যা।

শেষ কথা 

ভূমিকম্পের মাত্রা প্রকাশক যে পদ্ধতি গুলো বের হয়েছে এগুলো সবই ভূমিকম্প পরবর্তী সময়ে আমাদেরকে তথ্য প্রদান করতে সক্ষম। ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার মতো কোন পদ্ধতি এখনো আবিষ্কৃত হয়নি।

তবে ভূতত্ত্ববিদ তার গবেষণা থেকে একটি ধারণা করতে পারে।  তবে তার কোন নির্দিষ্ট সময় বা কাল বলতে পারেনা। যার কারণে আমাদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *