ব্যাপন কাকে বলে? কেন ঘটে?
ব্যাপন হল একটি প্রক্রিয়া যেখানে কোনো পদার্থের অণু বেশি ঘনত্বের স্থান থেকে কম ঘনত্বের স্থানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে চলে যায়। এটি সমান তাপমাত্রা ও চাপে ঘটে।
Table of Contents
ব্যাপন কী/ কাকে বলে?
Diffusion বা ব্যাপন হলো একটি প্রক্রিয়া যেখানে কোনো পদার্থের অণু বেশি ঘনত্বের একটি স্থান থেকে কম ঘনত্বের স্থানে চলে যায়। এটি কঠিন, তরল, এবং গ্যাসীয় পদার্থেও ঘটে। উদাহরণস্বরূপ, ঘরের এক কোণে পারফিউমের বোতল খুললে রাখলে, সেন্ট পুরো ঘরে ছড়িয়ে যায়। এটি গ্যাসীয় পদার্থের ব্যাপনের উদাহরণ।
আরও পড়ুনঃ তরঙ্গ কাকে বলে?
তাপমাত্রা এবং ঘনত্ব ব্যাপনে প্রভাব ফেলে। তাপমাত্রা বেড়ে গেলে, অণুর গতি বাড়ে এবং ব্যাপন দ্রুত হয়। ঘনত্বের পার্থক্য বেশি হলে, ব্যাপন দ্রুত ঘটে। প্রক্রিয়া চলতে থাকে যতক্ষণ না অণুর ঘনত্ব সমান হয়।
তরল পানিতে কয়েক ফোটা তরল নীল বা তুঁতের দ্রবণ মেশানো হলে তা পানিকে নীল বর্ণে পরিণত করে, এটি তরল পদার্থের ব্যাপনের উদাহরণ। চিনির দ্রবণ কঠিন পদার্থের ব্যাপন একটি উদাহরণ, কারণ চিনি ঘনত্বে বেশি।
আরও পড়ুনঃ সরণ কাকে বলে?
তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে অণুগুলোর গতিবেগ বৃদ্ধি পায় এবং বাপন দ্রুতগামী হয়। ব্যাপনের হার ঘনত্বের তফাত এবং পদার্থের মাধ্যমে বিশেষ ক্ষমতা নির্ভর করে, তফাত যত বেশি তত বাপন হার দ্রুত হয়। সমস্ত পদার্থ অণুর সম্মিলনে গঠিত এবং সব অণু গতিশীল থাকে। ব্যাপন ঘটতে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ এবং তাপমাত্রা গতির ভিন্নতা না থাকলেও ঘনত্বের ভিন্নতা থাকতে হবে।
ব্যাপন কেন ঘটে ব্যাখ্যা কর?
ব্যাপন ঘটে কারণ পদার্থের অণুগুলো সর্বদা গতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এই গতির কারণে অণুগুলো একটি অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যান। এটি স্বতঃস্ফূর্ত প্রক্রিয়া এবং ঘটে ঘনত্বের পার্থক্যের ভিত্তিতে। অর্থাৎ, যে অঞ্চলে ঘনত্ব বেশি, সেখান থেকে অণু কম ঘনত্বের অঞ্চলে যায়। এছাড়া,
আরও পড়ুনঃ যোজনী কাকে বলে
- অণুর চলন: ব্যাপনের মূল কারণ হলো অণুর চলনের প্রক্রিয়া। যখন একটি স্থানে পদার্থের ঘনত্ব বেশি হয় এবং অপর স্থানে ঘনত্ব কম থাকে, তখন ঘনত্বের ভিন্নতা দ্বারা পদার্থ উভয় স্থানে সরে যায়।
- মোলেকুলার আপেক্ষা: পদার্থের মোলেকুল অণুর মধ্যে আপেক্ষা ঘটতে পারে, যা ব্যাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। মোলেকুলার আপেক্ষা ঘটে যখন এই মোলেকুল একে অপরের সাথে সংঘটিত হয়।
- তাপ এবং চাপের পরিবর্তন: তাপমাত্রা এবং চাপের পরিবর্তন ব্যাপনের মাধ্যমে গতি দেয়। উচ্চ তাপমাত্রা এবং চাপের পরিবর্তন ব্যাপন প্রক্রিয়াকে দ্রুত করে এবং সমান ঘনত্বের স্থানে পদার্থ যাওয়ায় সাহায্য করে।
তাপমাত্রা বাড়লে অণুর গতি বাড়ে, এবং ব্যাপন দ্রুত ঘটে। একইভাবে, ঘনত্বের পার্থক্য বেশি হলে ব্যাপনের হার দ্রুত হয়। এই সব কারণে ব্যাপন ঘটে এবং এটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া।
ব্যাপনের প্রয়োজনীয়তা কী?
ব্যাপনের প্রয়োজনীয়তা অনেক। প্রথমত, এটি পরিবেশে স্বাভাবিক ভাবে বিভিন্ন পদার্থ মিশিয়ে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, জলে অক্সিজেন মিশে জীবন বজায় রাখে। দ্বিতীয়ত, মানব শরীরে ব্যাপন হয়ে পোষণ এবং অপচয় ঘটে। তৃতীয়ত, এটি কৃষি, খাদ্য প্রসেসিং, ঔদ্যোগিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়। চতুর্থত, এটি বায়ু ও জলের গুণগুলি সমর্থন করে, যা পরিবেশ ও জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সারাংশ
সংক্ষিপ্ত রূপে, ব্যাপন পদার্থের অণুগুলোর ঘনত্বের পার্থক্য দ্বারা ঘটে এবং এটি প্রাকৃতিক একটি প্রক্রিয়া। তাপমাত্রা এবং চাপের পরিবর্তন ও মোলেকুলার আপেক্ষা ব্যাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ব্যাপন ঘটতে বায়ুমণ্ডলীয় চাপের এবং তাপমাত্রা গতির ভিন্নতা না থাকলেও ঘনত্বের পার্থক্য থাকতে হবে। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি পরিস্থিতির পরিবর্তনের সাথে ঘটে এবং অনেক সাধারণ পদার্থে দেখা যায়, যেমন পানি এবং চিনি।