পদার্থ কাকে বলে

পদার্থ কাকে বলে? পদার্থের বৈশিষ্ট্যসমূহ

আমাদের এই মহাবিশ্ব সম্পর্কে  জানতে হলে প্রত্যেকেরই পদার্থ সম্বন্ধে জ্ঞান থাকা অবশ্যই অত্যন্ত জরুরী। পদার্থ বলতে যে সকল বস্তু জায়গা দখল করে, আয়তন আছে, ওজন আছে, বল প্রয়োগে বাধা প্রদান করে সেগুলোকেই পদার্থ বলা হয়।

পদার্থ সম্বন্ধে আরও বিস্তারিত আলোচনা নিচে করা হলো আপনারা মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। 

পদার্থ কাকে বলে

পদার্থ কাকে বলে? 

আমাদের এই বৃহৎ পৃথিবীতে অনেক ধরনের বস্তু আমরা লক্ষ্য করে থাকি এবং দেখতে পাই। বস্তু গুলোর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন প্রকারের বস্তু রয়েছে।

আরও জানুনঃ রসায়ন কাকে বলে?

পৃথিবীর এ সকল বস্তুগুলোর মধ্যে যেসব বস্তু জায়গা দখল করে এবং যেসব বস্তুর ওজন আছে আয়তন আছে এবং বল প্রদান করলে সেই বস্তুগুলো বাধা প্রদান করতে পারে সেগুলোকেই প্রধানত পদার্থ বলে আখ্যায়িত করা হয়।

 সহজ কথায় বলতে গেলে, যারা বাধা প্রদান করে এবং যাদের আয়তন এবং ওজন আছে শুধুমাত্র তারাই হচ্ছে পদার্থ। এবং অন্য যে সব বস্তু রয়েছে তারা সবাই অপদার্থ বা তারা পদার্থ হিসেবে গণ্য হবে না।

পদার্থ কাকে বলে

পদার্থের শ্রেণীবিভাগ

পদার্থ কি সাধারণত বা প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। পদার্থের এই তিনটি ভাগের সংজ্ঞা সহ নিচে দেওয়া হলঃ

আরও জানুনঃ ভৌত পরিবর্তন কাকে বলে?

কঠিন পদার্থ

যে সকল পদার্থের নির্দিষ্ট আকার এবং আয়তন রয়েছে এবং সাধারণ অবস্থায় বা কোন বল প্রয়োগ না করলে তার অবস্থা বা আকারের কোন পরিবর্তন হয় না তাদেরকেই কঠিন পদার্থ বলা হয়। যেমনঃ ইট, পাথর ,লোহা ইত্যাদি।

তরল পদার্থ

যে সকল পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন রয়েছে, কিন্তু কোন আকার নেই তাদেরকে তরল পদার্থ বলা হয়ে থাকে। এবং এই সকল পদার্থ যে পাত্রে রাখা হয় সেই পাত্রের আকার ধারণ করে থাকে। যেমনঃ পানি, দুধ,তেল ইত্যাদি।

বায়বীয় পদার্থ

যে সকল পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন বা আকার কোনটাই নেই ।যে পাত্রে রাখা হয় সেই পাত্রে পুরোটা জায়গায় দখল করে থাকে তাকেই বায়বীয় পদার্থ বলা হয়ে থাকে। বায়বীয় পদার্থ যে পাত্রে রাখা হোক না কেন সেই পাত্রটি পাত্র জুড়েইছে তারা অবস্থান করে থাকে এবং অর্থাৎ বায়বীয় পদার্থের প্রত্যেকটা অনু ওই পাত্রের পুরোটা অংশ জুড়েই থাকে। যেমনঃ বিভিন্ন ধরনের গ্যাস যেমন হাইড্রোজেন গ্যাস অক্সিজেন গ্যাস নাইট্রোজেন গ্যাস ইত্যাদি।

পদার্থের বৈশিষ্ট্যসমূহ

প্রত্যেকটা ভাগের পদার্থের বিভিন্ন এবং আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে এইসব বৈশিষ্ট্য নিচে আলাদা আলাদাভাবে আলোচনা করা হলো।

আরও জানুনঃ সমযোজী বন্ধন কাকে বলে?

কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট্য

  • এদের নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন রয়েছে।
  • এদের ওপর বল প্রয়োগ করেলে এরা দৃঢ়ভাবে বাধা প্রদান করে।
  • সাধারণ অবস্থায় কঠিন পদার্থের আকার স্থির অবস্থায় থাকে। অত্যাচারাল অবস্থায় প্রত্যেকটি কঠিন পদার্থের আকার নির্দিষ্ট।
  • এদের তাপ দিলে এরা প্রসারিত হতে পারে। কিছু কিছু পদার্থ রয়েছে যাদের তাপ দিলে সরাসরি বাড়তি পরিণত হয়ে যায়।
  • এদের নিজস্ব ওজন রয়েছে।

তরল পদার্থের বৈশিষ্ট্য

  • এদের নির্দিষ্ট আয়তন রয়েছে কিন্তু নির্দিষ্ট কোন আকার নেই।
  • এদের যে পাত্রে রাখা হয় সেই পাত্রের নেয় আকার  ধারণ করে থাকে।
  • এদের তাপ প্রদান করলে সরাসরি বাষ্পে পরিণত হয়।
  • এদের নিজস্ব ওজন রয়েছে।
  • এরা উপর থেকে নিচের দিকে গড়িয়ে গড়িয়ে চলে।

বায়বীয় পদার্থের বৈশিষ্ট্য

  • এদের নির্দিষ্ট কোন আকার বা আয়তন নেই।
  • এদের মধ্যকার অনু গুলো অনেক দূরে দূরে অবস্থান করে।
  • এদের নির্দিষ্ট ওজন রয়েছে।
  • এদের যে পচে রাখা হয় সেই পাত্র পুরোপুরিটা জায়গা দখল করে নেয়।
  • এরা জায়গা বা স্থান দখল করে।
  • এদের ঠান্ডা করা হলে এরা তরলের পরিণত হয়ে যায়।

উৎপাদনগতভাবে পদার্থের শ্রেণীবিভাগ

উৎপাদনগতভাবে পদার্থ কিভাবে পদার্থ দুইটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। উৎপাদনগতভাবে পদার্থের এই দুইটি ভাগের নাম এবং তার ব্যাখ্যা সহ সংজ্ঞা দেওয়া হলো।

আরও জানুনঃ মোলারিটি কাকে বলে?

  1. মৌলিক পদার্থঃ যে সমস্ত পদার্থ তার মৌলিক গুণাবলী এখনো রেখে রাসায়নিক যৌগে অংশগ্রহণ করতে পারে তাদেরকে মৌলিক পদার্থ বলা হয়। যেমন সোনা, অক্সিজেন ,রুপা ইত্যাদি।
  2. যৌগিক পদার্থঃ যে সমস্ত পদার্থকে ভাঙলে  একাধিক পদার্থ অর্থাৎ একাধিক মৌলিক পদার্থ উৎপন্ন হয় বা পাওয়া যায় তাদেরকে যৌগিক পদার্থ বলা হয়ে থাকে। অর্থাৎ একটি যৌগিক পদার্থের মধ্যে দুই বা তত দিয়ে মৌলিক পদার্থ থাকে। যেমন লবণ ,পানি, বায়ু ইত্যাদি।

শেষ কথা

যেহেতু মহাবিশ্বের প্রায় প্রতিটি জিনিসই পদার্থ দিয়ে তৈরি তাই আমাদের সকলের উচিত এই পদার্থ সম্বন্ধে বিস্তারিত জ্ঞান লাভ করা এবং তা কত ধরনের বা কত প্রকারের হয়ে থাকে তা সম্বন্ধে জানা এবং অপরকে জানানো।

আর পদার্থ সম্বন্ধে পরিষ্কারভাবে জানার জন্য উপরে লেখাটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকার করতে হবে। তাহলে আপনি খুব সহজেই পদার্থ কি এবং কত প্রকার তা সম্বন্ধে জানতে পাবেন। এবং পদার্থ খুব সহজে চিনতে পারবেন ।আর আপনি যদি উপরে লেখাটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *