নিউক্লিয়াস কাকে বলে

নিউক্লিয়াস কাকে বলে? এর কয়টি অংশ ও কি কি?

নিউক্লিয়াস হল একটি কোষের সবচেয়ে ঘন, পর্দাঘেরা, এবং প্রায় গোলাকার অংশ, যা প্রোটোপ্লাজমের জীবন্ত ক্রিয়া বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। এটি কোষের সব জীবনিক ক্রিয়া বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে

নিউক্লিয়াস কাকে বলে

নিউক্লিয়াস কাকে বলে? 

নিউক্লিয়াস কোষের একটি অত্যন্ত গোলাকার এবং পর্দাঘেরা অংশ, যা কোষের সব জৈবনিক ক্রিয়া বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। এটি সাধারণত চারটি অংশ নিয়ে গঠিত হয় এবং নিউক্লিয়াস এক বা একাধিক ইলেকট্রন দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে।

আরও পড়ুনঃ শ্বসন কাকে বলে?

রবার্ট ব্রাউন (Robert Brown) ১৮৩১ সালে সর্বপ্রথম কোষের নিউক্লিয়াস আবিষ্কার করেন। এটি কোষের সব জৈবনিক ক্রিয়া বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিটি পারমাণবিক নিউক্লিয়াস এক বা একাধিক নিউক্লিয়ন দিয়ে গঠিত হয় এবং নিউক্লিয়াস এক বা একাধিক ইলেকট্রন দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে।নিউক্লিয়াস সাধারণত গোলাকার বা উপবৃত্তাকার হয়। এটি প্রধানত চারটি অংশ নিয়ে গঠিত।

নিউক্লিয়াস এর আয়তন কত?

নিউক্লিয়াসের আয়তন ক্রমাগত বা সাধারণভাবে পরিবর্তন করতে পারে, কারণ এটি কোষের প্রকাশ্য পর্দাঘেরা অংশ। সাধারণভাবে, এর আয়তন প্রায় 5 থেকে 10 মিক্রোমিটার বা 5,000 থেকে 10,000 ন্যানোমিটারের মধ্যে থাকে।

আরও পড়ুনঃ সরণ কাকে বলে?

নিউক্লিয়াস এর কয়টি অংশ ও কি কি?

নিউক্লিয়াসে চারটি প্রধান অংশ পাওয়া যায়, যা এই অংশগুলির সুচালক হিসেবে কাজ করে এবং কোষের প্রক্রিয়া বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।

  1. ক্রোমেটিন: ক্রোমেটিন নিউক্লিয়াসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়, যা ডেওক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (DNA) বা জীবনের বাক্য সাধারণভাবে বুঝা যায়। ক্রোমেটিন একটি প্রক্রিয়াশীল অংশ, যা ডিএনএ মোলিকুলের সাথে ইন্টারেকশন করে এবং জীবনের গতি এবং স্থিতির নিয়ন্ত্রণ করে।
  2. নিউক্লিয়ান: নিউক্লিয়ান ডিএনএ মোলিকুলের নিয়ন্ত্রণকারী অংশ, যা ডিএনএ মোলিকুলের বিভিন্ন অংশের মধ্যে ইন্টারেকশন করে এবং ডিএনএ মোলিকুলের অর্থ্যান্য অংশগুলির প্রতি নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করে।
  3. নিউক্লিওলাস: এটি নিউক্লিয়াসের অংশের মধ্যে সবচেয়ে স্পষ্ট এবং গোলাকার। নিউক্লিওলাসে রিবোনিউক্লিক এসিড (RNA) তৈরি হয়, যা ডিএনএ মোলিকুলের মাধ্যমে বানানো হয় এবং জীবের বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়।
  4. নিউক্লিয়ার মেম্ব্রেন: নিউক্লিয়ার মেম্ব্রেন নিউক্লিয়াস সংরক্ষণ করে এবং নিউক্লিয়াসের আয়তন আপেক্ষিত কোষের অন্যান্য অংশে থেকে আলাদা থাকে। এটি নিউক্লিয়াসের ভেতরের প্রক্রিয়া গুলির সঙ্গে সুরক্ষা দেয় এবং নিউক্লিয়াস ফাংশন সমর্থন করে।
নিউক্লিয়াস

এই চারটি অংশ সম্মিলিত ভাবে নিউক্লিয়াসের সঠিক কাজে অবদান রাখে এবং কোষের সাধারণ কাজ সম্পাদন করে।

নিউক্লিয়াসের ঘনত্ব বের করার নিয়ম কী?

ঘনত্ব বের করার নিয়ম খুবই সহজ:

ঘনত্ব = ভর / আয়তন

এখানে,

  • ভর (A) হলো নিউক্লিয়াসের ভর সংখ্যা,
  • আয়তনে (d) নিউক্লিয়াসের আয়তন,
  • প্রতিটি নিউক্লিয়নের গড় ভর (m),
  • ব্যাসার্ধ (r) নিউক্লিয়াসের গোলক ব্যাসার্ধ, যা প্রায় 1.4 ফেম্টোমিটার (fm)।

এই নিয়ম মোতাবেক, নিউক্লিয়াসের ঘনত্ব বের করতে আমরা ভর (A) এবং ব্যাসার্ধ (r) এর মাধ্যমে গুরুত্ব প্রদান করি। এর ফলে, সকল পরমাণুর নিউক্লিয়াসের ঘনত্ব প্রায় এক “একক” হয় এবং তার মান প্রায় 1.45 x 10^17 কিলোগ্রাম প্রতি কুবিক মিটার (kg/m^3)। 

আরও পড়ুনঃ যোজনী কাকে বলে

নিউক্লিয়াসবিহীন কোষ কোনটি?

নিউক্লিয়াসবিহীন কোষ হল প্রোক্যারিয়োটিক কোষ” বা “প্রিমিটিভ কোষ”। এই কোষগুলির নিউক্লিয়াস অথবা কেন্দ্রিকা নামক কোন অবস্থা থাকে না।  অর্থাৎ এই কোষের অংশে কোন নিউক্লিয়াস নেই । প্রোক্যারিয়োটিক  কোষগুলি সম্প্রসারণ অথবা জৈবিক ক্রিয়া মাধ্যমে বায়োজন  শক্তি উৎপন্ন করে। যেই কারণে এ কোষগুলির কোন নিউক্লিয়াসের প্রয়োজন হয় না।

পরিশেষে

নিউক্লিয়াস কোষের কেন্দ্রীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা জীবনের সব ক্রিয়া-বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। এটি চারটি প্রধান অংশে গঠিত: ক্রোমেটিন, নিউক্লিয়ান, নিউক্লিওলাস, এবং নিউক্লিয়ার মেম্ব্রেন। এর ঘনত্ব প্রায় 1.45 x 10^17 kg/m^3 এবং আয়তন 5,000 থেকে 10,000 ন্যানোমিটার। প্রোক্যারিয়োটিক কোষ নিউক্লিয়াসবিহীন। সম্পূর্ণ তথ্য মিলিয়ে, নিউক্লিয়াস জীবনের মৌলিক কাজে অমিলিত।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *