নাগরিক কাকে বলে? নাগরিকের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?
নাগরিক হলো যে ব্যক্তি কোনো রাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করে, রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে, অধিকার ভোগ করে এবং কর্তব্য পালন করে। যদিও নাগরিকতা ও নাগরিক ভিন্ন বিষয়।
Table of Contents
নাগরিক কাকে বলে?
নাগরিক হলো এমন একজন ব্যক্তি যে কোনো নির্দিষ্ট রাষ্ট্রের আইনানুগ সদস্য। এই সদস্যত্ব তাকে কিছু নির্দিষ্ট অধিকার এবং কর্তব্য দেয়। নাগরিক হিসেবে তার কর্তব্য হলো রাষ্ট্রের আইন মেনে চলা, কর দেওয়া, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া। প্রতিপক্ষে, রাষ্ট্র তাকে নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা এবং অন্যান্য সুবিধা প্রদান করে।
আরও জানুনঃ ভূমিকম্পের মাত্রা কি?
নাগরিক ও নাগরিকতা দুইটি ভিন্ন ধারণা। নাগরিকতা হলো একটি আইনি পদমর্যাদা যা একজন ব্যক্তির রাষ্ট্রের সাথে তার সম্পর্ক নির্ধারণ করে। কিন্তু নাগরিক হলো সেই সম্পর্কের প্রতিফলন।
এছাড়া, নাগরিকের ধরণ পরিবর্তন করতে পারে রাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী। উল্লেখযোগ্য যে, প্রাচীন সময়ে ক্রীতদাস, শ্রমিক এবং মহিলারা অনেক ক্ষেত্রে নাগরিক হিসেবে গণ্য হত না। তাদের অধিকার ও কর্তব্য ছিল সীমিত।
নাগরিক অধিকার কত প্রকার?
নাগরিক অধিকার বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। তবে, সাধারণভাবে এটি তিন প্রকারে বিভাজিত করা হয়:
আরও জানুনঃ ইতিহাস কাকে বলে?
- প্রাথমিক অধিকার: এই ধরণের অধিকার হলো জীবন, স্বত্ব এবং মৌলিক স্বাধীনতা। এটি জন্মগত অধিকার হিসেবে গণ্য হয় এবং কোনো রাষ্ট্রের আইনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়।
- সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার: এই অধিকারের অন্তর্গত আসে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান এবং সামাজিক সুরক্ষা। এই অধিকার নাগরিকের জীবনের মান উন্নত করে।
- রাজনৈতিক অধিকার: এই ধরণের অধিকার হলো ভোট দেওয়া, রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া এবং সরকারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ।
এই তিন ধরণের অধিকার মিলে একজন নাগরিকের জীবনকে সম্পূর্ণ করে। তবে, এই অধিকারগুলি রাষ্ট্র থেকে প্রাপ্ত হয় এবং রাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী পরিবর্তন হতে পারে।
নাগরিকের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?
নাগরিকের বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন ধরণের হতে পারে এবং এটি রাষ্ট্রের আইন, সংস্কৃতি, এবং সামাজিক প্রয়োজনীতির উপর নির্ভর করে। তবে, কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য নিম্নলিখিত:
আরও জানুনঃ পরিবার কাকে বলে?
- আইনের প্রতি শ্রদ্ধা: একজন নাগরিক তার রাষ্ট্রের আইন মেনে চলতে হবে এবং আইনি প্রক্রিয়াকে মেনে চলতে হবে।
- কর্তব্য পালন: নাগরিকের কর্তব্য হলো রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করা এবং কর্তব্য পালন।
- সামাজিক সংশ্লিষ্টতা: নাগরিকেরা তাদের সমাজের উন্নতির জন্য কাজ করতে হবে।
- পোলিটিক্যাল সচেতনতা: নাগরিকেরা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সচেতন এবং অংশগ্রহণশীল হতে হবে।
- মৌলিক অধিকারের সচেতনতা: নাগরিকেরা তাদের মৌলিক অধিকার জানতে এবং তা প্রয়োজনে দাবি করতে হবে।
- সম্প্রেষণশীলতা: নাগরিকেরা বৈষম্য এবং বিভেদভাবনা প্রতিরোধ করতে হবে।
- স্বাধীনতা এবং স্বত্ব: নাগরিকেরা তাদের স্বাধীনতা এবং স্বত্বের প্রতি সচেতন হতে হবে।
- আর্থিক সচেতনতা: নাগরিকেরা তাদের আর্থিক দায়িত্ব জানতে এবং পালন করতে হবে।
এই বৈশিষ্ট্যগুলি মিলে একজন ব্যক্তিকে একজন সচেতন, দায়িত্বশীল এবং সম্পূর্ণ নাগরিক গড়ে তোলে।
সারমর্ম
নাগরিক হলো এমন ব্যক্তি যা একটি রাষ্ট্রের সদস্য হিসেবে অধিকার এবং কর্তব্য পালন করে, সমাজের উন্নতি এবং রাষ্ট্রের প্রগতির জন্য কাজ করে। এই অধিকার এবং কর্তব্য নাগরিককে সমাজের সাথে সংশ্লিষ্ট এবং স্বাধীনতা ও স্বত্বের জন্য সচেতন করে তোলে। নাগরিক হওয়া একটি মর্যাদার বিষয়।