চতুর্ভুজ কাকে বলে? চতুর্ভূজের বৈশিষ্ট্য
চারটি রেখাংশ দ্বারা আবদ্ধ ক্ষেত্রফল কে চতুর্ভুজ বলা হয়। অর্থাৎ একটি চতুর্ভুজের চারটি রেখাংশ আবদ্ধ অবস্থায় থাকে।
জ্যামিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো চতুর্ভুজ। জ্যামিতি ভালোভাবে বুঝতে হলে আমাদের সর্বপ্রথমে চতুর্ভুজ সম্পর্কে জানতে হবে। চতুর্ভুজ কাকে বলে এ সম্পর্কে আমরা নিচে আলোচনাটি ভালোভাবে পড়তে হবে। । তাহলে চলুন আরদেরি না করে শুরু করা যাক চতুর্ভুজ কি তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।
Table of Contents
চতুর্ভুজ কাকে বলে?
একটি সমতল তলে চারটি রেখাংশ মিলিত হয়ে আবদ্ধ যে ক্ষেত্রফল তৈরি করে তাকে চতুর্ভুজ বলা হয়। সহজ করে বলতে গেলে আবার এভাবে বলা যায় যে, চারটি রেখাংশ বা চারটি বাহু দ্বারা আবদ্ধ ক্ষেত্রফলকেই চতুর্ভুজ বলা হয়।
আরও জানুনঃ সমবাহু ত্রিভুজ কাকে বলে?
চতুর্ভুজ কে আমরা সাধারণত বর্গক্ষেত্র ,আয়তক্ষেত্র ,ট্রাপিজিয়াম, রম্বস ইত্যাদি আকারে দেখে থাকি। এছাড়া চতুর্ভুজকে আরো বিভিন্ন রূপে দেখে থাকি যা সচরাচর খুবই কম পাওয়া যায়।
চতুর্ভুজ একটি সমতলে বা একটি পৃষ্ঠে ৪টি বাহু বা রেখাংশ দ্বারা আবদ্ধ একটি ক্ষেত্র। এটি দ্বিমাত্রিক বা ত্রিমাত্রিক কোন বস্তু বা ক্ষেত্রফল বুঝায় না।
চতুর্ভূজের বৈশিষ্ট্য সমূহ
চতুর্ভুজের কিছু সাধারণ এবং মৌলিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আমাদের জানা অবশ্যই প্রয়োজন। কারণ এগুলো না জানলে আমরা চতুর্ভুজ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাবো না। নিচে চতুর্ভুজের বৈশিষ্ট্য সমূহ আলোচনা করা হলঃ
আরও জানুনঃ রেখাংশ কাকে বলে?
- প্রতিটি চতুর্ভুজের চারটি রেখাংশ থাকে এগুলোকে বাহু বলা হয়।
- চতুর্ভুজের চারটি কোণ থাকে। এই চারটি কোণের সমষ্টি সর্বদা 2 সরল কোণ বা ৩৬০ ডিগ্রী হয়ে থাকে।
- চতুর্ভুজ সাধারণত চারটি রেখা একটি সমতল চিত্র। এর কোন ত্রিমাত্রিক অস্তিত্ব নেই।
- প্রতিটি চতুর্ভুজের চারটি শীর্ষবিন্দু রয়েছে।
- চতুর্ভুজ এ দুইটি কর্ণ দ্বারা চারটি আলাদা আলাদা সমকোণী ত্রিভুজ বিভক্ত করা যায়। এই ধরনের চতুর্ভুজকে আয়তক্ষেত্র বলা হয়ে থাকে।
- প্রতিটি চতুর্ভুজের দুইটি কর্ণ থাকে।
বিভিন্ন ধরণের চতুর্ভূজ
আমরা চতুর্ভুজ সাধারণত অনেক ধরনের দেখে থাকি। বাহু এবং কোণ ভেদে বিভিন্ন ধরনের চতুর্ভুজ হয়ে থাকে এই চতুর্ভুজের ধরন সম্পর্কে আমরা নিচে আলোচনা করব।
আরও জানুনঃ সম্পূরক কোণ কাকে বলে?
আয়তক্ষেত্র
- যে চতুর্ভুজের বিপরীত বাহুদ্বয় পরস্পর সমান এবং কোনগুলো সবগুলো সমকোণ সেই চতুর্ভুজকেই আয়তক্ষেত্র বলা হয়।
- আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রে কোন গুলো সব এক সমকোণ বা ৯০ ডিগ্রি হয়।
- এর বিপরীত বাহুগুলো পরস্পর সমান এবং সমান্তরাল হয়।
বর্গ
- যে চতুর্ভুজের চারটি বাহু সমান এবং কোন গুলো সমকোণ তাকে বর্গ বলা হয়।
- বর্গের প্রতিটি বাহুর মান একই হয়ে থাকে।
- বর্গের প্রতিটি কোণের মান এক সমকোণ বা ৯০ ডিগ্রী হয়ে থাকে।
সামান্তরিক
- যে চতুর্ভুজ এর বিপরীত বাহুগুলো সমান এবং সমান্তরাল কিন্তু কোনগুলো সমকোণ নয় তাকে সামন্তরিক বলা হয়।
- সামান্তরিকের ক্ষেত্রে এর কোনগুলো ৯০ ডিগ্রী হয় না বা এক সমকোণ হয় না।
- কোনগুলো এক সমকোণ না হলেও সামান্তরিকের ক্ষেত্রেও বাহুগুলো সমান এবং সমান্তরাল হয়ে থাকে।
রম্বস
- যে চতুর্ভুজের চারটি বাহুই সমান কিন্তু কোনগুলো সমকোণ নায় তাকে রম্বস বলা হয়।
- অর্থাৎ রম্বসের চারটি বাহু ও একই সমান হয়ে থাকে।
- কিন্তু রম্বসের কোনগুলো ৯০ ডিগ্রী হয় না বা এক সমকোণ হয় না।
ট্রাপিজিয়াম
- যে চতুর্ভুজের দুইটি বাহু শুধু মাত্র সমান্তরাল হয় তাকে ট্রাপিজিয়াম বলে।
- অর্থাৎ ট্রাপিজিয়ামে শুধুমাত্র একজোড়া বাহুই সমান্তরাল হয়ে থাকে। অন্য দুই বাহু সমান্তরাল হতেও পারে আবার নাও হতে পারে।
- ট্রাপিজিয়ামের সমান্তরাল বাহু দুইটি একই সমান হয় না।
- ট্রাপিজিয়ামের কোণগুলো ও ৯০ ডিগ্রী বা এক সমকোণ হয় না।
এগুলো ছাড়া আরো অনেক ধরনের চতুর্ভুজ লক্ষ্য করা যায় যেমন জটিল চতুর্ভুজ, অবতল চতুর্ভুজ, অনিয়মিত চতুর্ভুজ, ঘুড়ি, সমকোণী ট্রাপিজিয়াম, সমদ্বিবাহু ট্রাপিজিয়াম ইত্যাদি।
শেষ কথা
জ্যামিতি শিখার জন্য চতুর্ভুজ সম্পর্কে জানা আমাদের অত্যাবশ্যকীয় এবং সকলের জন্য একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য উপরের সম্পূর্ণ লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। যদি আপনি লেখাটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।