হিসাব বিজ্ঞান কাকে বলে? হিসাববিজ্ঞান কত প্রকার?
হিসাব বিজ্ঞান বা অ্যাকাউন্টিং হল অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক এবং অনার্থিক তথ্যের পরিমাপণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং যোগাযোগের একটি পদ্ধতি। এটি ১৪৫৮ খ্রিস্টাব্দে বেনেডিক্ট কটরুলজেভিক কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
Table of Contents
হিসাব বিজ্ঞান কাকে বলে ও কত প্রকার?
হিসাব বিজ্ঞান বা অ্যাকাউন্টিং হল আর্থিক ও অনার্থিক তথ্যের সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিশ্লেষণ এবং প্রতিবেদনের একটি বিজ্ঞান। এটি ব্যবসায়, সরকার, এনজিও এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের আর্থিক কার্যকলাপের সুষ্ঠু পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হিসাব বিজ্ঞানের মূল লক্ষ্য হল সঠিক ও সম্পূর্ণ তথ্য প্রদান করা।
আরও পড়ুনঃ সামাজিক বীমা কাকে বলে?
হিসাব বিজ্ঞানের বিভিন্ন প্রকার রয়েছে:
- ফাইনান্শিয়াল অ্যাকাউন্টিং: এটি প্রধানত বাহ্যিক প্রয়োজনের জন্য আর্থিক তথ্য তৈরি করে।
- ম্যানেজেরিয়াল অ্যাকাউন্টিং: এটি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনের জন্য তথ্য তৈরি করে।
- কস্ট অ্যাকাউন্টিং: এটি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন খরচের হিসেব রাখে।
- অডিটিং: এটি আর্থিক তথ্যের সঠিকতা যাচাই করে।
- ট্যাক্স অ্যাকাউন্টিং: এটি কর নিয়ে সম্পর্কিত।
- গভর্নমেন্টাল অ্যাকাউন্টিং: এটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ।
- নন-প্রফিট অ্যাকাউন্টিং: এটি এনজিও এবং অন্যান্য অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের জন্য।
আরও পড়ুনঃ পণ্য সূচক কাকে বলে?
প্রতিটি প্রকারের অ্যাকাউন্টিং নিজের নিজেকের বিশেষ নিয়ম, প্রয়োজনীয়তা এবং প্রয়োগ ক্ষেত্র রয়েছে। এই বিভিন্ন প্রকারের অ্যাকাউন্টিং মিলে একটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ব্যবস্থা চালু রাখে।
হিসাব বিজ্ঞান জনক কে?
হিসাব বিজ্ঞানের জনক মনে করা হয় লুকা প্যাসিওলি, একজন ইতালীয় গণিতবিদ। তিনি ১৪৯৪ সালে “Summa de Arithmetica, Geometria, Proportioni et Proportionalita” নামের একটি বই প্রকাশ করেন। এই বইটি ডাবল এন্ট্রি বুককিপিং পদ্ধতির প্রথম ব্যাপক বর্ণনা দেয়। প্যাসিওলি এই কাজ হিসাব বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করে। তার প্রযুক্তি আজও ব্যবসায় ও অর্থনীতিতে প্রয়োগ পেতে থাকে।
আরও পড়ুনঃ পরিসংখ্যান কাকে বলে?
হিসাব বিজ্ঞান এর কাজ কি?
হিসাব বিজ্ঞান বা অ্যাকাউন্টিং একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞান যা একটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক তথ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিশ্লেষণ এবং প্রতিবেদনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এর মূল কাজ হলো আর্থিক তথ্যের সঠিক ও সম্পূর্ণ রেকর্ড রাখা, যা প্রতিষ্ঠানের নিষ্পত্তি, লাভ-লোকসান এবং অন্যান্য আর্থিক কার্যকলাপের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
হিসাব বিজ্ঞানের কাজ বিভিন্ন ধরণের।
- প্রথমত, এটি ব্যবসায়িক লেন-দেনের রেকর্ড রাখে।
- দ্বিতীয়ত, এটি ব্যবসায়ের আর্থিক অবস্থার বিশ্লেষণ করে।
- তৃতীয়ত, এটি বাজেট প্রস্তুতি এবং মনিটরিং করে।
- চতুর্থত, এটি ট্যাক্স প্রস্তুতি এবং প্ল্যানিং করে। পাঁচমত, এটি আর্থিক রিস্ক এবং মৌলিক পরিসংখ্যানের বিশ্লেষণ করে।
হিসাব বিজ্ঞানের আরও কিছু কাজ হলো আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুতি, কর্মচারীর বেতন ম্যানেজমেন্ট, ক্রেডিট এবং কালেকশন ম্যানেজমেন্ট, স্টক ম্যানেজমেন্ট, এবং আরও অনেক কিছু।
সম্পূর্ণভাবে বলতে, হিসাব বিজ্ঞান একটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্থিতি এবং কার্যকলাপের সঠিক চিত্র তৈরি করে।
হিসাব বিজ্ঞানের স্বর্ণ সূত্র কি?
হিসাব বিজ্ঞানের স্বর্ণ সূত্র হলো দু তরফা দাখিলা পদ্ধতি বা ডেবিট/ক্রেডিট—এটি হিসাব বিজ্ঞানের মৌলিক নিয়মের একটি সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা। এই সূত্র ব্যবহার করে, হিসাবরক্ষকরা লেন-দেনের ডেবিট এবং ক্রেডিট অংশগুলির সঠিক রেকর্ড রাখতে পারেন।
এই স্বর্ণ সূত্রের মাধ্যমে, হিসাব বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব আরও প্রতিস্থানিক হয়। এটি নিশ্চিত করে যে প্রতিটি লেন-দেন সঠিকভাবে রেকর্ড করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের আর্থিক রিপোর্ট সঠিক এবং বিশ্বস্ত।
এই সূত্র ব্যবহার করে, হিসাব বিজ্ঞান আরও কার্যকর এবং সুসংগঠিত হয়। এটি কেবল হিসাব রাখার জন্য নয়, বরং এটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্থিতির সঠিক বিশ্লেষণ এবং মূল্যায়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মানে, এটি প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করে।
সারমর্ম
সংক্ষিপ্তভাবে বলতে, হিসাব বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানের আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং কার্যকলাপের সঠিক চিত্র তৈরি করে এবং আর্থিক তথ্যের সঠিক রেকর্ড রাখে। এই বিজ্ঞানের মাধ্যমে আর্থিক কার্যকলাপের পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, এবং নিরীক্ষণ সহ বিশ্লেষণ করা হয়। এটি আর্থিক ব্যবস্থা চালু রাখে এবং সঠিক আর্থিক রিপোর্ট প্রদান করে।