স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে? স্থিতিস্থাপকতা সূত্র কি?
স্থিতিস্থাপকতা/Elasticity হলো একটি বস্তুর ভৌত ধর্ম, যা বল প্রয়োগ করলে বিকৃত হওয়া বস্তুটি আদি অবস্থায় ফিরে আসার ক্ষমতা বোঝায়। এটি বাধা দেওয়ার ক্ষমতা এবং চলরাশির পরিবর্তনের হারের সাথে সম্পর্কিত।
Table of Contents
আংশিক স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে উদাহরণ দাও
আংশিক স্থিতিস্থাপকতা বলতে বোঝায় কোনো পণ্য বা সেবার দামের একটি নির্দিষ্ট পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় ক্রেতার প্রয়োজনের পরিমাণ কতটুকু পরিবর্তিত হবে। এটি প্রয়োজনের এবং দামের মধ্যে একটি স্পেসিফিক সম্পর্ক প্রতিস্থাপন করে।
আরও পড়ুনঃ পরমাণু কাকে বলে?
উদাহরণস্বরূপ, ধরা যাক পেট্রোলের দাম বাড়ে ৫%। আংশিক স্থিতিস্থাপকতা দেখাবে এই ৫% দাম বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় পেট্রোলের প্রয়োজন কতটুকু কমবে বা বেড়বে। যদি প্রয়োজন ২% কমে যায়, তাহলে আমরা বলতে পারি পেট্রোলের আংশিক স্থিতিস্থাপকতা -০.৪ হবে (২% কমানো / ৫% বাড়ানো)।
এই ধারণা অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োগ পেতে পারে, যেমন কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি।
স্থিতিস্থাপকতা সূত্র কি?
স্থিতিস্থাপকতা বা এলাস্টিসিটি মেপে কোনো বস্তুর প্রতিক্রিয়া বা প্রতিস্থাপন ক্ষমতা। এর জন্য বিভিন্ন সূত্র ব্যবহার করা হয়। সবচেয়ে প্রচলিত সূত্র হলো হুকের সূত্র, যা হলো:
আরও পড়ুনঃ অভিস্রবণ কাকে বলে?
F=k×x
এখানে, F = প্রয়োজিত বল k = স্থিতিস্থাপক ধর্মণী (এলাস্টিক কন্স্ট্যান্ট) x = বস্তুর বিকৃতি (দৈর্ঘ্যের পরিবর্তন)
এই সূত্র মৌলিকভাবে বলে, একটি বস্তুর বিকৃতি প্রয়োজিত বলের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। এটি সাধারণত হুকের আইনের আওতাভুক্ত বস্তুগুলির জন্য প্রযোজ্য।
অর্থনীতিতে, স্থিতিস্থাপকতা মেপে দাম এবং প্রয়োজনের মধ্যে সম্পর্ক। এর সূত্র হতে পারে:
E=Percentage change in Quantity DemandedPercentage change in PriceE=Percentage change in PricePercentage change in Quantity Demanded
এই সূত্রগুলি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় এবং তারা বিভিন্ন ধরণের স্থিতিস্থাপকতা মেপে।
অর্থনীতিতে স্থিতিস্থাপকতা কাকে বলে?
অর্থনীতিতে স্থিতিস্থাপকতা বলতে মূলত একটি বাজারের প্রতিক্রিয়া বোঝানো হয়। এটি দেখায় কোন পণ্য বা সেবার দাম পরিবর্তন হলে তার প্রয়োজনের পরিমাণ কতটুকু পরিবর্তিত হবে। এটি দুই প্রকারের হতে পারে: মূল্য স্থিতিস্থাপকতা এবং আয় স্থিতিস্থাপকতা।
আরও পড়ুনঃ গ্যালাক্সি কাকে বলে?
মূল্য স্থিতিস্থাপকতা হলো দাম বদলে গেলে প্রয়োজনের পরিমাণ কতটুকু বদলে যাবে, এবং আয় স্থিতিস্থাপকতা হলো কোনো ব্যক্তির আয় বদলে গেলে তার প্রয়োজনের পরিমাণ কতটুকু বদলে যাবে।
উচ্চ স্থিতিস্থাপকতা থাকলে, দাম বা আয়ের একটি ছোট পরিবর্তন বড় প্রভাব ফেলতে পারে। কম স্থিতিস্থাপকতা থাকলে, দাম বা আয়ের পরিবর্তন কম প্রভাব ফেলে।
স্থিতিস্থাপকতা অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যেমন ব্যক্তিগত প্রয়োজন, বাজার ডিমান্ড, সরকারি নীতি, ইত্যাদি প্রয়োগ পেতে পারে। এটি প্রয়োজনের এবং সরবরাহের মডেলিং, প্রাইসিং স্ট্র্যাটেজি, এবং মার্কেট রিসার্চে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সারমর্ম
এই নিবন্ধ থেকে আমরা জানতে পেরেছি স্থিতিস্থাপকতা বা এলাস্টিসিটি হলো একটি বস্তুর ধর্ম, যা তার প্রতিক্রিয়া বা প্রতিস্থাপন ক্ষমতা বোঝায়। এটি অর্থনীতিতে দাম এবং প্রয়োজনের মধ্যে সম্পর্ক প্রদর্শন করে, এবং সূত্র ব্যবহার করে এই সম্পর্ক মেপে। স্থিতিস্থাপকতা একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতি নীতি উন্নতি করতে সাহায্য করে।